বিকাশ পার্সোনাল একাউন্ট | সম্পর্কিত একটি ধামাকা আর্টিকেল
আমরা ২ টি বা তার বেশি আর্টিকেল লেখার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এতে বিকাশ নিয়ে পুরোপুরি ধারণা দিতে পারার মতো আর্টিকেল থাকবে। মাত্র কয়েকটি আর্টিকেল পড়েই আপনি খুব সহজেই বিকাশ সম্পর্কে জেনে নিতে পারবেন। আর্টিকেলটি আপনার উপকারে না লাগলেও হয়তো অনেকের উপকারে লাগবে তাই শেয়ার করতে ভুলবেন না কিন্তু!
কেননা আজ আমরা শেয়ার করবো বিকাশ পার্সোনাল একাউন্ট, একটা nid দিয়ে কয়টি বিকাশ একাউন্ট খোলা যায়, জন্ম নিবন্ধন দিয়ে বিকাশ, একাউন্ট খোলার নিয়ম, বিকাশ একাউন্ট খোলার নিয়ম, বিকাশ পার্সোনাল একাউন্ট খোলার নিয়ম, বাটন মোবাইলে বিকাশ একাউন্ট খোলার নিয়ম, বিকাশ একাউন্ট কার নামে আছে, বিকাশ ব্যালেন্স চেক নাম্বার, বিকাশ এজেন্ট থেকে টাকা পাঠানোর নিয়ম, বিকাশ নাম্বার পরিবর্তন, বিকাশ একাউন্ট বন্ধ করার নিয়ম সম্পর্কিত একটি ধামাকা আর্টিকেল।
বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে সহজে ও দ্রুত টাকা পাঠানোর জন্য বিকাশ জনপ্রিয় মোবাইল নেটওয়ার্ক হিসেবে বর্তমানে বেশ পরিচিত। এটি ব্যবহার করে যেকেউ সেকেন্ডের মধ্যে বাংলাদেশের যে কোন জায়গায় টাকা পাঠাতে সক্ষম হয়। অনলাইনভিত্তিক ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তা এবং গ্রাহকদের মধ্যে লেনদেনের পাশাপাশি সাধারণ মানুষের নিত্যদিনকার লেনদেনের সাথী এই বিকাশ!
শুধু তাই নয় বেশকিছু অনলাইন শপিং সাইট বর্তমানে বিকাশ সাপোর্ট করছে বলে আপনিও ঘরে বসেই বিকাশেে মাধ্যমে পে করতে পারবেন! কিন্তু বিকাশ পার্সোনাল একাউন্ট খোলা যায় কিভাবে বা কিভাবে এটি ব্যবহার করে? জানতে চান? তবে পুরো আর্টিকেলের সাথে থাকুন। স্টেপ বাই স্টেপ আজ আমাদের সাথে বিকাশ পারসোনাল সম্পর্কিত বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করবো।
বিকাশ পার্সোনাল একাউন্ট কি?
বিকাশ পার্সোনাল একাউন্ট হলো পার্সোনাল রিটেইল একাউন্ট। এই বিকাশ পার্সোনাল একাউন্ট মূলত আপনাকে বিকাশ গ্রাহকের পাঠানো পেমেন্ট গ্রহণ করতে সাহায্য করবে। পাশাপাশি পেমেন্ট পাঠানোর কাজটিও সারতে পারবেন ইজিলি।
এই বিকাশ পার্সোনাল একাউন্টের মাধ্যমে লেনদেন করতে হলে যেকোনো বিকাশ গ্রাহককে আপনার একাউন্টের QR স্ক্যান করতে হবে। স্ক্যান করার সুযোগ না থাকলে গ্রাহক বা অপরপ্রান্তের ব্যাক্তিকে পেমেন্ট অপশন থেকে আপনার রিটেইল একাউন্টের নাম্বার দিয়ে পেমেন্ট করতে হবে। বিকাশে অসংখ্য সেন্ট মানি ফিচার রয়েছে। এর যেকোনো একটি ব্যবহার করে আপনি পার্সোনাল রিটেইল একাউন্ট থেকে বিকাশের যেকোনো গ্রাহককে টাকা পাঠাতে পারবেন।
বিকাশ পার্সোনাল একাউন্ট মূলত তাদের জন্যই যারা ব্যবসায়ী এবং নিয়মিত প্রচুর লেনদেন করে থাকে। বিজনেসের কাজে বিকাশ ব্যবহার এতোদিন কিছুটা অর্থহীন মনে হলেও এখন এই ফিচারের কারণে তা বেশ কাজে আসবে বলে আশা করা যায়!
একটা nid দিয়ে কয়টি বিকাশ একাউন্ট খোলা যায়?
একজন বিকাশ ব্যবহারকারী হিসেবে আপনি একটি এনআইডি দিয়ে শুধুমাত্র একটি বিকাশ পার্সোনাল একাউন্টই খুলতে পারবেন। এরবেশ কখনোই পারবেন না। এক্ষেত্রে আপনার কাছে যতগুলো নম্বরই থাকুক, তা অন্তত দ্বিতীয়বার বিকাশ খোলার কোনো কাজেই আসবে না। অর্থ্যাৎ একটি এনআইডি কার্ড দিয়ে আপনি একটার বেশি একাউন্ট খুলতে পারবেন না।
যারা মনে করেন বেশ কয়েকটি সিম থাকলেই দুইটি বা তিনটি বিকাশ পার্সোনাল একাউন্ট খোলা যাবে, তারা ভুল ধারণা নিয়েই বসে আছেন। কেননা বিকাশ একাউন্ট খুলতে এনআইডি কার্ডের তথ্য লাগে এবং একটি একাউন্টের জন্য একটি এনআইডি কার্ডের তথ্যের প্রয়োজন পড়ে! এক্ষেত্রে আপনি এই তথ্য অন্য কোনো বিকাশ একাউন্ট খোলার সময় ব্যবহার করতে পারবেন না।
জন্ম নিবন্ধন দিয়ে বিকাশ একাউন্ট খোলার নিয়ম
যাদের এনআইডি কার্ড নেই তারা কিন্তু হতাশ হবেন না! কেননা বিকাশ জন্মনিবন্ধনকে কাজে লাগিয়ে বিকাশ পার্সোনাল একাউন্ট খোলার সুযোগ রেখেছে। যদি আপনি আপনার দৈনন্দিন জীবনে ঘরে বসে আর্থিক লেনদেন করতে চান এবং আপনার কোনো এনআইডি কার্ড না থাকে তবে আপনি জন্মনিবন্ধন ব্যবহার করতে পারেন।
তবে এক্ষেত্রে আপনাকে একটু ঘরের বাইরে যাওয়ার প্রয়োজন পড়তে পারে। কেননা এনআইডি ছাড়া জন্মনিবন্ধন দিয়ে বিকাশ পার্সোনাল একাউন্ট খুলতে আপনাকে যেতে হবে বিকাশ এজেন্টের কাছে। এজেন্ট ছাড়া নরমাল বা নিউবি বিকাশ ইউজার কাজটি করতে পারবে না। বিকাশ পার্সোনাল একাউন্ট খুলতে এজেন্টের কাছে যাওয়ার আগে সাথে করে দুইকপি ছবি, জন্ম নিবন্ধন অবশ্যই নিয়ে নিবেন। বাদবাকি কাজ এজেন্টের!
বিকাশ একাউন্ট খোলার নিয়ম
যারা ঘরে বসেই বিকাশ পার্সোনাল একাউন্ট খোলার নিয়ম জেনে একাউন্ট খুলতে চাচ্ছেন, আর্টিকেলের এই পর্বটি তাদের জন্যই!
কারণ আমি এই পর্বে দেখাবো কিভাবে ঘরে বসেই বিকাশ একাউন্ট খোলার নিয়ম ফলো করে বিকাশ পারসোনাল একাউন্ট খোলা যায়! স্টেপগুলি হলোঃ-
- বিকাশ অ্যাপ দিয়ে বিকাশ পার্সোনাল একাউন্ট খুলতে গেলে মোবাইলে বিকাশ অ্যাপ ইন্সটল করার পর অ্যাপটি ওপেন করে নিতে হবে।
- আপনার নিরপত্তার জন্য চাওয়া প্রতিটি নোটিফিকেশনে "Allow" অপশনে ক্লিক করতে হবে।
- সামনে থাকা “লগ ইন / রেজিস্ট্রেশন” ক্লিক করুন।
- যে নাম্বারে বিকাশ খুলবেন সেটি হাতের কাছে মাথায় রাখুন।
- এবার এখন একটি এন্টার পেজ চলে আসলে সেখানে আপনার মোবাইল নাম্বার চাইলে তা বসিয়ে নিচের এলাউ বাটনে ক্লিক করুন।
- পরবর্তী ধাপে কিছুটা লোডিং হলে বাংলাদেশের সিম কার্ড কোম্পানিগুলোর নাম আসবে এবং আপনি যে নাম্বারটি দিয়ে বিকাশ পারসোনাল একাউন্ট খুলতে চাচ্ছেন সেই নাম্বারের অপারেটর কোনটি তা সিলেক্ট করে ক্লিক করে দিন।
- একাউন্ট খুলতে চাওয়া নাম্বারে ৬ ডিজিটের একটি ভেরিফিকেশন কোড গেছে তা নিশ্চিত করুন।
- বিকাশ অ্যাপের পরবর্তী পেইজে আসা খালি ঘরে সেটি পূরণ করুন। যদিও এটি অনেক সময় অটো বসে যায়! এই কোড কখনোই অন্য কারো কাছে প্রদান করা যাবে না!
- সঠিকভাবে ভেরিফাই হয়ে গেলে পরবর্তী পেইজে বিকাশ থেকে কিছু “শর্তাবলি” দেওয়া হবে এবং আপনাকে পুরোপুরি তা পড়ে নিতে হবে।
- এলাউ বাটনে ক্লিক করলে পরবর্তী পেইজ ওপেন হবে।
- এই পেইজে আপনার NID কার্ড, প্রয়োজনীয় তথ্য ও নিজের চেহারার ইনস্ট্যান্ট ছবি দিয়ে পূনরায় এলাউ বাটনে ক্লিক করে এই ভেরিফাই করার পর্ব শেষ করতে হবে।
- ডিস্প্লেতে আপনি একটি ফ্রেম দেখতে পাবেন এবং সেই ফ্রেমে থাকা বর্ডার অনুযায়ী আপনাকে ভোটার কার্ডের ছবি তোলে নিতে হবে।
- পর্যাপ্ত পরিমাণের আলোতে স্পষ্ট ছবি উঠানো নিশ্চিত করে সাবমিট করে ফেলুন। এভাবে করে আইডির পেছনের ছবিটিও তুলে ফেলুন।
- পরবর্তী ধাপে আইডির যাবতীয় তথ্য আপনার মোবাইলে শো করলে সবকিছু ঠিক আছে কিনা নিশ্চিত হয়ে নিন।
- এবার বিকাশ পারসোনাল একাউন্ট খোলার জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য চাইলে তা পূরণ করে নিজের চারকোণা ছবি সাবমিট করুন।
- এবার আপনার কনফার্মেশন এসএমএস (SMS) এর জন্য অপেক্ষা করার পালা৷ মূলত ৭২ ঘন্টার মাঝেই এই ম্যাসেজ চলে আসবে এবং আপনি ৫০/- বোনাস হিসেবে পাবেন৷
- এবার পিন কোড সেট করতে নতুন করে লগইন অপশনে ক্লিক করুন। আগের মতো বিকাশ মোবাইল নাম্বার এবং তার অপারেট সিলেক্ট করে এলাউ বাটনে ক্লিক করলে নতুন পিন সেট করার অপশন আসবে। নতুন পিন সেট করে নিন। ব্যাস হয়ে গেলো বিকাশ পার্সোনাল একাউন্ট খোলার নিয়ম মেনে একাউন্ট খোলার পর্ব!
বিকাশ একাউন্ট কার নামে আছে?
সাধারণভাবে কোন বিকাশ কার NID দিয়ে একাউন্ট খোলা তা জানার কোন উপায় নেই। তবে একটি পথ খোলা আছে। সেটি হলো যে নাম্বারে বিকাশ পার্সোনাল একাউন্ট খুলেছেন, তা নিয়ে সরাসরি বিকাশ অফিসে যাওয়া। নতুবা ঘরে বসে এজেন্টকে এই নাম্বারে 16247 কল দিয়ে জেনে নিতে পারেন।
বিকাশ ব্যালেন্স চেক নাম্বার
যেকোনো মোবাইল ফোনে ডায়াল অপশনে প্রবেশ করে *247# কোড ডায়াল করলেই তারা আপনাকে এই বিকাশ ব্যালেন্স চেক নাম্বার একাউন্ট ব্যালেন্সের পরিমাণ জানিয়ে দিবে।
বিকাশ এজেন্ট থেকে টাকা পাঠানোর নিয়ম
বিকাশ কোড *247# ব্যবহার করে খুব সহজেই ঘরে বসে এক একাউন্ট থেকে অন্য একাউন্টে টাকা পাঠানো যায়। কোডটি ডায়াল করলে নতুন যে পেইজটি আসবে সেটির ১ নম্বর অপশন থেকে সেন্ড মানি (Send money) সিলেক্ট করে যেই একাউন্টে টাকা পাঠাবেন সেই বিকাশ নম্বরটি টাইপ করে নিন। এবার এমাউন্ট লিখে পিন টাইপ করে পাঠিয়ে দিন। ম্যাসেজ দেখে নিশ্চিত হোক টাকা পাঠানো সফল হয়েছে কিনা!
বিকাশ নাম্বার পরিবর্তন
বিকাশ নাম্বার পরিবর্তন কখনোই সম্ভব না। তবে আপনি চাইলে সিমের অপারেটর চেঞ্জ করে নিতে পারেন। এক্ষেত্রে এই চেইঞ্জের কাজটি আপনার যে সিম অপারেটর পরিবর্তন করতে চাচ্ছেন সেই অপারেটরের কাছে কল করে সম্পন্ন করে নিন।
বিকাশ একাউন্ট বন্ধ করার নিয়ম
বিকাশ সরাসরি বন্ধ করা না গেলেও ডিএক্টিভেট করার অপশন আছে। সুতরাং আপনার চিন্তিত হওয়ার কোনো কারন নেই। কেননা আপনি ইজিলি আপনার বিকাশের নাম পরিবর্তন করে ফেলতে পারবেন! এক্ষেত্রে নিকটবর্তী গ্রাহক সেবা কেন্দ্রে কল করে সেই একাউন্টটি Deactivate বা বন্ধ করতে সুপারিশ করতে পারেন৷
ইতি কথা
বিকাশ পার্সোনাল একাউন্ট প্রশ্নের উত্তর একসাথে রাখার চেষ্টা করেছি। আশা করি আপনাদের বুঝতে কোনো সমস্যা হয়নি! তবুও যদি কোনো পয়েন্ট বুঝতে সমস্যা হয় বা আমাদের নিজেদের ভুল হয় তবে জানাবেন কিন্তু! আজ এতোটুকুই! ভালো থাকুন! বিকাশের সাথেই থাকুন! ধন্যবাদ সবাইকে!