ads

 জেনে নিন নতুন শিক্ষা ব্যবস্থা ২০২৩ সম্পর্কিত সকল গুরুত্বপূর্ণ তথ্য

আপনি হয়তো জানেন বাংলাদেশ সরকার শিক্ষার্থীদের জন্য নতুন শিক্ষা ব্যবস্থা তৈরি করেছে। যা নতুন শিক্ষা ব্যবস্থা ২০২৩ হিসাবে প্রচুর আলোচিত হচ্ছে। আশা করা যায় প্রাক-প্রাথমিক থেকে শুরু করে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত দেশের শিক্ষাক্রমে আগামী ২০২৩ সাল থেকে বড় ধরনের এই পরিবর্তন আপনার সন্তানদের বেশ উপকৃত করবে। 


নতুন শিক্ষা ব্যবস্থা ২০২৩ ২০২৩ সালের নবম শ্রেণির বইয়ের তালিকা  ২০২৩ সালের পাঠ্য বইয়ের তালিকা নবম শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের বইয়ের তালিকা নবম শ্রেণির ম.jpg


প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থা: নতুন শিক্ষা ব্যবস্থা ২০২৩

প্রথম, দ্বিতীয়, ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা নতুন পাঠ্যসূচির আলোকে বই পাবে। তৃতীয়, চতুর্থ, অষ্টম ও নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা নতুন বই পাবে ২০২৪ সাল থেকে। আর পঞ্চম ও দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা পাবে ২০২৫ সাল থেকে।


চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণিতে বাংলা, ইংরেজি, গণিত, বিজ্ঞান ও সামাজিক বিজ্ঞানে ৬০ শতাংশ ক্লাস পারফর্মেন্স এবং ৪০ শতাংশ সামষ্টিক মূল্যায়ন করা হবে। এছাড়া শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য এবং সুরক্ষা, ধর্ম শিক্ষা এবং শিল্পকলা বিষয়ে ক্লাস পারফর্মেন্স দিয়ে শতভাগ মূল্যায়ন করা হবে।


এছাড়াও নতুন এই শিক্ষাক্রমে থাকবে না পিইসি ও জেএসসির মতো পাবলিক পরীক্ষাগুলো। এমনকি তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত কোনো ধরনের বার্ষিক পরীক্ষাও নেওয়া হবে না নতুন এই শিক্ষাক্রমে।


উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা ব্যবস্থা: নতুন শিক্ষা ব্যবস্থা ২০২৩

নবম ও দশম শ্রেণিতে প্রত্যেক শিক্ষার্থীর জন্য কৃষি, সেবা বা শিল্প খাতের একটি পেশার ওপর দক্ষতা অর্জন বাধ্যতামূলক করা এবং দশম শ্রেণি শেষে যেকোনো একটি পেশায় কাজ করার মতো পেশাদারি দক্ষতা অর্জনের ব্যবস্থাও রয়েছে নতুন শিক্ষাক্রমে। 


মাধ্যমিক পর্যায়ে শিক্ষার্থীরা প্রথম পাবলিক পরীক্ষায় বসবে দশম শ্রেণিতে। এরপর একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণিতে দুটি পাবলিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। দুই পরীক্ষার ফল যোগ করে উচ্চ মাধ্যমিকের ফল ঘোষণা করা হবে। অর্থাৎ নতুন পাঠ্যক্রমের আওতায় ২০২৬ সালে শিক্ষার্থীরা এসএসসি এবং ২০২৮ সালে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় অংশ নেবে।


ষষ্ঠ, সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের বাংলা, ইংরেজি, গণিত, বিজ্ঞান ও সামাজিক বিজ্ঞানে ক্লাস পারফর্মেন্স ৬০ শতাংশ এবং সামষ্টিক মূল্যায়ন হবে ৪০ শতাংশ। এছাড়া জীবন ও জীবিকা, ডিজিটাল প্রযুক্তি, শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য এবং সুরক্ষা, ধর্ম শিক্ষা এবং শিল্প ও সংষ্কৃতি বিষয়ে শিখনকালীন শতভাগ মূল্যায়ন করা হবে।


নতুন শিক্ষা ব্যবস্থা ২০২৩ সম্পর্কিত অন্যান্য নিয়ম

সাপ্তাহিক ছুটি দুই দিন করা, অভিজ্ঞতাভিত্তিক শিখন-শেখানো কার্যক্রম বিদ্যালয়ের বাইরেও পারিবারিক ও সামাজিক পরিসরে অনুশীলন করা এবং সব শিক্ষার্থীর অভিন্ন মূল্যবোধ ও দৃষ্টিভঙ্গি অর্জনের জন্য শিক্ষাক্রম রূপরেখার ১০টি বিষয়ের সঙ্গে মাদ্রাসা ও কারিগরি শাখার বিশেষায়িত বিষয়গুলোর যৌক্তিক সমন্বয় সাধন করার কথা রয়েছে এই শিক্ষাক্রমে।


শিক্ষার্থীদের কাছে শিক্ষা কার্যক্রমকে আরও আকর্ষণীয় করার পাশাপাশি তাদের জীবন ও জীবিকা সম্পর্কিত পাঠ শেখানোর জন্য সেখানে ব্যবস্থা তুলে ধরা হবে। এতে করে বেড়ে উঠবে শিক্ষার্থীদের যোগাযোগ করার সামর্থ্য, সমন্বয়, নিজেদের প্রকাশ করা, অন্যদের মতামতকে শ্রদ্ধা করা, গভীরভাবে চিন্তা করা, সমস্যার সমাধান করা, ভাষা শিক্ষা, যোগাযোগ, গণিত, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, আইসিটি, পরিবেশ ও জলবায়ু এবং মূল্যবোধ ও নৈতিকতার মতো বিষয়গুলির উপর দক্ষতা।


নতুন শিক্ষা ব্যবস্থা ২০২৩ তৈরির কারণ

শিক্ষকদেরও প্রচলিত শিখনপদ্ধতির বাইরে গিয়ে শিক্ষার্থীদের পড়াতে হবে। আর বড় সংস্কার করতে গেলে চ্যালেঞ্জ আসবে, বাধা আসবে। এটাই স্বাভাবিক। এ কারণেই শিক্ষাক্রমের পরিপূর্ণ বাস্তবায়নের জন্য ২০২৭ সাল পর্যন্ত সময় নেওয়া হচ্ছে, যাতে করে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে ধাপে ধাপে শিক্ষাব্যবস্থার বিভিন্ন কাঠামো ও মানবসম্পদকে প্রস্তুত করে বাস্তবায়নের দিকে নিয়ে যাওয়া যায়। 


দেশে এই প্রথম কোনো শিক্ষাক্রম এত দীর্ঘ সময় নিয়ে গবেষণার ভিত্তিতে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। তবে মনে রাখা দরকার, উন্নত দেশ তথা পৃথিবীর কোনো দেশেই শিক্ষাক্রম শতভাগ বাস্তবায়নের রেকর্ড নেই। এসব বিবেচনায় নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নের সাফল্য জানতে হলে বেশ খানিকটা সময় দিতেই হবে।


অতীতের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে এবং বেশ কয়েকটি গবেষণা এবং যাচাই-বাছাই থেকে পাওয়া ফলাফলের ভিত্তিতেই এবারের শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন পরিকল্পনাটি সুচিন্তিতভাবে করা হয়েছে। এটিও মনে রাখা দরকার, নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন শিক্ষাব্যবস্থায় বড় সংস্কারের স্বপ্ন দেখাচ্ছে। যেমন শিক্ষার্থীদের মুখস্থবিদ্যার বদলে বাস্তব অভিজ্ঞতাভিত্তিক শিক্ষাদানের দিকে এগিয়ে যাওয়া হবে।


ইতি কথা

যেহেতু ২০২৫ সাল থেকে শুরু হবে পুরোপুরি নতুন শিক্ষাক্রম সেহেতু প্রস্তুতি নিন। যত্ন নিন নিজের সন্তানদের। দেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থা বিবেচনা করে এই পাঠ্যক্রমের খসড়া তৈরি হবে শীঘ্রই। 

Previous Post Next Post

{ads}