ads

 

 বাংলাদেশের সেরা ১০ টি বই: যা আপনার পড়া উচিত

প্রতিটি মানুষের চিন্তার জগতকে প্রসারিত করতে গিয়ে যে উপকরণটি সবচেয়ে বেশি কার্যকর ভুমিকা পালন করে সে উপকরণটি বলো "বই"! যতবেশি বই পড়বেন নিজের অস্তিত্ব সম্পর্কে ততবেশি পাকাপোক্ত ধারণার সৃষ্টি হবে।  


বাংলাদেশের সেরা ১০ টি বই  বাংলাদেশের সেরা উপন্যাস পৃথিবীর বিখ্যাত বই বাংলা সাহিত্যে যে ১০০ টি বই আপনাকে পড়তেই হবে বিশ্বের সেরা বইয়ের তালিকা বাংলাদেশ.jpg

তবে একেবারে সব ধরণের বই পড়ে সময় নষ্ট করবার কোনো দরকার নেই। এক্ষেত্রে আজ আমরা পুরো জীবনে বই পড়বার একটি শর্ট সিলেবাস শেয়ার করবো। যেখানে থাকবে বাংলাদেশের সেরা ১০ টি বইয়ের তালিকা। চলুন তবে শুরু করা যাক। 


নিশীথিনী 

বইটির লেখক হুমায়ূন আহমেদ। এটি একটি উপন্যাস। যারা হুমায়ূন আহমেদের "দেবী" বইটি পড়েছেন তাদের ক্ষেত্রেই এই বইটি পড়ে ভেতরকার ম্যাসেজ বুঝতে পারাটা বেশ সহজ হবে। তবে "দেবী" বই না পড়েও বইটি পড়তে খুব একটা সমস্যা হওয়ার কথা না। 


বলে রাখা ভালো লেখকের জনপ্রিয় এই বইটি "দেবী" উপন্যাসের দ্বিতীয় অংশ। যার মূল চরিত্র হিসেবে মিসির আলীকে খুবই সুক্ষ্মভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। যারা থ্রিলার উপন্যাস পছন্দ করেন এই বইটি তাদের জন্য সেরা পছন্দ হতে পারে। কেননা থ্রিলার উপন্যাসের দিক দিয়ে দেশী উপন্যাস হিসেবে বইটি ইতিমধ্যেই বেশ সুনাম কুড়িয়েছে। 


শ্রীকান্ত 

এটি একটি মারাত্মক সাহিত্য ফোকাস করা বই। যেটি লিখেছেন শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়। অনেকেই বলে থাকে শরৎকে পড়তে না জানলে কিংবা না পড়লে পূর্ণরূপে সাহিত্যিক হওয়া যায়, যোগ্যতা সৃষ্টি হয় না। বাংলা সাহিত্য যাকে ছাড়া অপূর্ণ সেই মহান কবির লেখা এই বই পড়েনি এমন কোনো সাহিত্যপ্রেমী নেই। 


বইয়ের মূল চরিত্র একজন ভবঘুরে। এই ভবঘুরে লোকটার ভবঘুরে পথের নানান কাহিনী নিয়ে লেখা হয়েছে বইটি। বলা হয়ে থাকে এই বইটি শরৎচন্দ্রের সেরা সৃষ্টি। নতুন কিংবা পুরাতন যেকোনো ক্যাটাগরির সাহিত্যিকের ক্ষেত্রে বইটিকে পড়া আবশ্যক যোগ্যতা হিসেবে ধরে নেওয়া হয়। সেই সাথে বই পড়ুয়াদের কাছে ভীষণ দামী এই উপন্যাসটি। 


শেষের কবিতা

উপন্যাসটির নাম হয়তো অনেকেই শুনেছেন। বাংলা সাহিত্যের এক অনন্য সৃষ্টি হিসেবে বিবেচনা করা হয় বইটিকে। যারা বইটি পড়েননি তারা হয়তো বইয়ের নাম দেখেই ভাবছেন সম্ভবত বইটি কবিতা সম্পর্কিত কিংবা অসংখ্য কবিতায় ঠাসা পাতার গাদা। 


মোটেও না! বইটি একটি উপন্যাস। যা কিছুটা কঠিন। মন থেকে বইয়ের প্রতিটি অর্থ বুঝতে রবী ঠাকুরের অন্যান্য বইগুলি কিছুটা হলেও পড়ে দেখা দরকার! অথবা হাতের কাছে থাকা কবির কিছু কবিতা পড়েও আঁচ করা দরকার। 


১৯২৮ সালে প্রকাশিত হওয়া এই উপন্যাসটি ইংরেজিতেও অনূদিত হয়৷ আমিত এবং লাবণ্যের প্রেমের সম্পর্কে সাজানো একটি গল্প হলো এই "শেষের কবিতা" উপন্যাস। বইটি যারা এখনো পড়েননি তারা দ্রুত সংগ্রহ করে পড়ে ফেলুন। 


কুহেলিকা

কাজী নজরুল ইসলামের লেখা একটি চমৎকার বই এটি। এটি একটি উপন্যাস। যা ১৩৩৪ বঙ্গাব্দে প্রকাশিত হয়। সেবছর আষাঢ় মাসে মাসিক নওরোজ পত্রিকায় উপন্যাস প্রকাশ শুরু হয়। উল্লেখ্য পত্রিকাটি কলকাতার পত্রিকা ছিলো। তবে প্রথম অংশ প্রকাশিত হওয়ার পর কোনো কারণে পত্রিকাটি বন্ধ হয়ে যায়। সেই সাথে বন্ধ হয় যায় এই জনপ্রিয় উপন্যাসটির প্রকাশকর্ম! 


১৯৩১ সালে এসে উপন্যাসটি একেবারে পুরোপুরি বই আকারে প্রকাশিত হয়। বলে রাখা ভালো এর আগে সওগাত নামের আরো একটি জনপ্রিয় পত্রিকায় ধারাবাহিকভাবে উপন্যাসটি প্রকাশিত হয় এবং সেসময় উপন্যাসটি বেশ জনপ্রিয়তা অর্জন করতে সক্ষম হয়। 


ইমোশনাল মার্কেটিং

আপনি কি ব্যবসায়ী? প্রোডাক্ট সেলিং ট্রিকস এপ্লাই করতে গিয়ে হতাশ হচ্ছেন? এক্ষেত্রে আপনাকে একটি বই চরম মেডিসিন দিতে পারে। বইটির নাম "ইমোশনাল মার্কেটিং"। মুনির হাসান নামের একজন জনপ্রিয় ডিজিটাল মার্কেটার তার নিজস্ব অভিজ্ঞতার ঝুঁলি থেকে বইটি লিখেছে। যেহেতু এতে অভিজ্ঞতার মতো বেশ কার্যকর টিপস রয়েছে সেহেতু বইটির প্রতিটি কথা একজন মার্কেটারের জন্য বেশ গুরুত্বপূর্ণ।


একটি প্রোডাক্ট কিভাবে ইমোশনাল মার্কেটিংয়ের সাহায্যে সেল করবেন সে-সম্পর্কে বইটিতে বিস্তারিত দেওয়া আছে। বাঙালি যেহেতু ইমোশনের দাস, সেহেতু এই ইমোশনকে মার্কেটিংয়ের ক্ষেত্রে কাজে লাগিয়ে সেল জেনারেট করা যায়। যা কিভাবে করতে হবে সে-সম্পর্কে বইটিতে বিস্তারিতভাবে লেখা আছে। 


নেমেসিস

বইটি মোহাম্মদ নাজিমুদ্দিনের লেখা একটি থ্রিলার বই। মনকে সুস্থ ও প্রফুল্ল রাখতে বইটির জুড়ি মেলা ভার। বিশেষ করে যারা ডিপ্রেশনে রয়েছেন তাদের ক্ষেত্রে সেরা মেডিসিন হতে পারে বইটি। মূলত রেস্টুরেন্টের যেমন স্টার্টার প্যাক থাকে তেমনি বাঙ্গালি পাঠকের স্টার্টার প্যাক বলতে পারেন এই নেমেসিস বইটিকে।


বেগ বাস্টার্ড সিরিজ নামে পরিচিত এই বইটি পক্ষাঘাতগ্রস্ত অবস্থায় দেশের সবচাইতে জনপ্রিয় লেখকের খুন নিয়ে নিজেকে সাজিয়েছে। নেমেসিস থ্রিলার বইয়ের মেইন টপিক হলেও বাংলাদেশি পাঠক হিসেবে বইটি বুঝতে পারা কিছুটা কঠিন কাজ মনে হতে পারে। 


ফ্রিল্যান্সিং : ইন্টারনেট থেকে আয়

ফ্রিল্যান্সার নাসিমের লেখা এই বইটি নিউবি ফ্রিল্যান্সারদের উপযোগী করে লেখা হয়েছে। যারা সবেমাত্র এই সেক্টরে প্রবেশ করেছেন তাদের উদ্দেশ্যে খুবই সহজভাবে ফ্রিল্যান্সিংয়ের বিভিন্ন দিক তুলে ধরা হয়েছে। খুব সহজ উদাহরণ দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং এর বিভিন্ন প্রকারভেদকে সাজানো-গোছানো প্যাটার্নে উপস্থাপন করা হয়েছে। 


তবে বইটিতে লেখক চাইলে কিছু সোর্স মেনশন করে দিতে পারতেন। যা খুবই প্রয়োজনীয় ছিলো। কিন্তু তিনি তা করেননি। যেসব স্কিল গঠন করার কথা বলেছেন সেসবের নামকরণ করতে গিয়েও বেশকিছু বানান ভুল করে ফেলেছেন। পরবর্তীতে এসব বানান তিনি ঠিকও করেননি। যা বেশ দুঃখজনক। 


এবার ভিন্ন কিছু হোক

আরিফ আজাদের একটি জনপ্রিয় বই এই "এবার ভিন্ন কিছু হোক"। বইটিতে ইসলামিক দিক দিয়ে পর্দার গুরুত্বসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ টপিক নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। প্রতিটি প্র্যাকটিসিং মুসলিম যারা এখনো ইসলাম সম্পর্কে অনেককিছুই জানে না..তাদের ক্ষেত্রে বইটি বেশ গুরুত্বপূর্ণ। 


এই বইটির আলোচনার সারবস্তু হলো, পুরুষেরও পর্দা আছে এবং তাদের তা মেনে চলতে হবে। নারীদের পাশাপাশি পুরুষেরাও শালীন পোশাক পরিধান করে নিজ নিজ দৃষ্টির হেফাযত করবে। বইটি পড়ে ইসলামকে আঁকড়ে ধরাটা বেশ সহজ হবে বলে আমার মনে হয়েছে। বিশেষ করে পুরুষের পর্দার ব্যাপারে জানা যাবে অনেক অজানা তথ্য। 


ঝাকানাকা বিজ্ঞান 

নাম শুনেই বুঝতে পারছেন বইটি একটি বিজ্ঞান বিষয়ক বই। তাশফিকাল সামির লেখা এই বইটি বাংলা সাহিত্যের বিজ্ঞান ক্যাটাগরিকে সমৃদ্ধ করেছে। নিঃসন্দেহে সংগ্রহে রাখার মতো একটি বই এই ঝাকানাকা বিজ্ঞান। 


বইটিতে বেশকিছু শিক্ষনীয় ব্যাপার-স্যাপার রয়েছে। লেখকের বেশ দূরদর্শিতা প্রকাশ পেয়েছে বইটিতে। খুব সহজ ভাষায় বিজ্ঞানকে সঠিকভাবে তুলে ধরেছে লেখক। কঠিন সত্যের মুখোমুখি হলে যে রোমাঞ্চকর পরিবেশের সৃষ্টি হয়, সেই পরিবেশকে উপভোগ করতেও দরকার এই জনপ্রিয় বইটি পড়া। বইটি পৃষ্ঠার দিক দিয়ে বেশ ছোট। ফলে দ্রুত শেষ করা যাবে। বই পড়া শেষ করা নিয়ে যারা অস্থিরতায় ভুগেন বইটি তাদের জন্য শতভাগ পার্ফেক্ট। 


সফল উদ্যোক্তা

সুব্রত বাগচী লেখা এই বইটি উদ্যোক্তা বিষয়ক একটি বই। উদ্যোগ নিয়ে উদ্যোক্তা হয়ে কিভাবে জীবনে সফলতা লাভ করা যায় সে-সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে বইটিতে। 


উদ্যোক্তা হতে গেলে কি কি করতে হবে, কি কি করলে নিজের অভিজ্ঞতা বাড়ার পাশাপাশি লাভের মুখ দেখা যাবে সে-সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে বইটিতে। যারা নিজেদের ভবিষ্যতে উদ্যোক্তা হিসেবে দেখতে চান, বিশেষ করে সফল উদ্যোক্তা হিসেবে, তারা চাইলে বইটি এক্ষু্ণি সংগ্রহ করে পড়ে ফেলতে পারেন। নিজের ব্যাস্ততাকে দূরে ঠেলে নিজের মতো করে কিছু করতে গেলে আশা করি বইটি শতভাগ কাজে আসবে। 


ইতি কথা

পুরো আর্টিকেলটি পড়ে কি বুঝলেন? কোন কোন বইটি আপনার পড়া হয় নি? পড়ে ফেলা বইগুলি থেকে কি শিখলেন? সকল প্রশ্নের উত্তর আজই শেয়ার করুন কমেন্টবক্সে। ধন্যবাদ সবাইকে।

Previous Post Next Post

{ads}