ads

 ডোমেইন কিভাবে কাজ করে | ডোমেইন সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা 

আমরা অনেকেই ওয়েবসাইট নিয়ে কাজ শুরু করতে আগ্রহী। এই দলের প্রত্যেকের জন্যই ডোমেইন সম্পর্কিত প্রশ্ন থাকাটা স্বাভাবিক। যদিও ডোমেইনের সাথে ওয়েব হোস্টিং বিষয়টি একে অপরের সাথে সম্পর্কিত। ডোমেইন সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনার স্বার্থে আজকের আর্টিকেলের মূল টপিক শুধু ডোমেইনকেই রাখা হয়েছে।


ডোমেইন নেম কী? ডোমেইন এর কাজ কি ডোমেইন কিভাবে কিনব ডোমেইন নেম এ www থাকে কেন ডোমেইন কিনতে খরচ কনটেন্ট ডোমেইন কি ডোমেইন রেজিস্ট্রেশন ডোমেইন কি হোস্টিং কি.jpg
 সাধারণভাবে এক্সটেনশনের ওপর নির্ভর করে ডোমেইন ৪ ভাগে বিভক্ত হয়ে থাকে


সুতরাং আজকের ব্লগে থাকছে ডোমেইন কি, ডোমেইন কিভাবে কাজ করে, ডোমেইন নাম পছন্দ করা এবং কেনার গাইডলাইনসহ প্রয়োজনীয় খুঁটিনাটি আরও অনেক তথ্য। তাহলে আসুন শুরু করি। 


ডোমেইন নেম কী?

সরাসরি ভাবে বলতে গেলে বলতে হয় ডোমেইন এর অর্থ হলো স্থান। কিন্তু আমরা যে ডোমেইন নিয়ে আলোচনা করছি তা হলো মূলত একটি ইউনিক আইপি ঠিকানা। এই ঠিকানাকে কোনো নামে রূপান্তর করার মাধ্যমে ডোমেইন তৈরি করা হয়।


এক কথায় একটি ওয়েব সাইটের ঠিকানা হলো ডোমেইন। যেমন, afiaswriting.com, google.com, facebook.com এদের প্রত্যেকটি হলো এক একটি ডোমেইন।


ডোমেইন কত প্রকার?

ডোমেইন নানা ধরণের হয়ে থাকে। সাধারণভাবে এক্সটেনশনের ওপর নির্ভর করে ডোমেইন ৪ ভাগে বিভক্ত হয়ে থাকে। যেমনঃ-


  • টপ লেভেল ডোমেইন
  • কান্ট্রি লেভেল ডোমেইন
  • ফ্রি ডোমেইন
  • সাব ডোমেইন


টপ লেভেল ডোমেইন কি?

যে সমস্ত এক্সটেনশনওয়ালা ডোমেইনগুলোর চাহিদা খুব বেশি সেই এক্সটেনশনওয়ালা ডোমেইনগুলোই টপ লেভেল ডোমেইন। টপ লেভেল ডোমেইনগুলো টাকা দিয়ে কিনতে হয়। সার্চ ইঞ্জিনগুলো সাধারণত এধরণের ডোমেইনকে অধিক গুরুত্ব দিয়ে থাকে। 


তাছাড়া ভিজিটররাও টপ লেভেল ডোমেইন দেখলে আলাদা ভাবে মুল্যায়ণ করে। বর্তমানে ব্লগ ও সাধারণ ওয়েবসাইটের বেলায় .com এক্সটেনশনটি খুববেশি জনপ্রিয়।


কান্ট্রি লেভেল ডোমেইন কি?

যে এক্সটেনশনওয়ালা ডোমেইনগুলো কোন নির্দিষ্ট দেশকে বোঝায় মূলত সেগুলোই হচ্ছে কানট্রি লেভেল ডোমেইন।কান্ট্রি লেভেল ডোমেইনের মাধ্যমে নির্দিষ্ট দেশের মানুষকে টার্গেট করা হয়। 


কান্ট্রি লেভেল ডোমেইন ওয়েবসাইটগুলি নির্দিষ্ট দেশ হতে অন্য যেকোনো টপ লেভেল ডোমেইনওয়ালা ওয়েবসাইটের তুলনায় বেশি ভিজিটর আনতে পারে।বাংলাদেশের জন্য .bd, ইন্ডিয়ার জন্য .in, মালয়েশিয়ার জন্য .my, যুক্তরাজ্যের জন্য .uk, যুক্তরাষ্ট্রের জন্য .us এক্সটেনশনসহ ইত্যাদি কান্ট্রি লেভেল ডোমেইনের মধ্যে রয়েছে।


আপনার ওয়েবসাইটটি একাধিক দেশের মানুষের ক্ষেত্রে প্রজোয্য  হলে তবে কান্ট্রি লেভেল ডোমেইন ব্যবহার না করাই উত্তম।


কিছু কান্ট্রি কোড ডোমেইন এবং ফুল ফর্ম নিচে দেওয়া হলো:

  • .in ইন্ডিয়া
  • .us ইউনাইটেট স্টেট 
  • .cn চায়না
  • .ru রাশিয়া 
  • .br ব্রাজিল


ফ্রি ডোমেইন কি?

এক্সটেনশনওয়ালা ডোমেইন যেগুলি বিনা মূল্যে পাওয়া যায় সেগুলোকে ফ্রি ডোমেইন বলে। এমন ডোমেইনকে লো লেভেল ডোমেইনও বলে থাকে। উদাহরণ স্বরুপ লো লেভেল ডোমেইনের মধ্যে আছে .tk, .cf, .gq, .ml সহ ইত্যাদি।ফ্রি ডোমেইন  ব্যবহার পুরোপুরি অনিরাপদ হয়ে থাকে। 


কারণ যেকোনো টপ লেভেল ডোমেইন আমরা যদি ১০ থেকে ১৫ ডলার দিয়ে কিনে থাকি তাহলে ঐ ডোমেইনটি আমার নিয়ন্ত্রণে থাকা অবস্থায় অন্য কেউ ডোমেইন বিক্রির প্রতিষ্ঠানকে হাজার ডলার দিতে চাইলেও প্রতিষ্ঠানটি দিতে পারবেনা।অথচ ফ্রি ডোমেইনের ক্ষেত্রে বিষয়টি ঠিকতার বিপরীত।


আপনি যদি Freenom থেকে কোনো আমরা যদি ফ্রি ডোমেইন বিনা মূল্যে কিনেনি আমার ডোমেইনটি যদি অন্য কারো পছন্দ হয়ে যায়, তবে সে ক্ষেত্রে মাত্র ৮ থেকে ১৫ ডলার দিয়ে সে আমার ডোমেইনটি কিনে বা কেড়ে নিতে পারবে। যেহেতু আমি ডোমেইনটি নিয়েছিলেন একেবারে ফ্রিতে, তাই আমার কিছু বলার অধিকার আর থাকলনা।


সাব ডোমেইন কি?

সাব ডোমেইন হচ্ছে মূল ডোমেইনের একটি অংশ। যেমন https://blog.bdtechinfo.com/। এখানে bdtechinfo.com এটা Root বা মেইন ডোমেইন। আর ব্লগ হচ্ছে সাব ডোমেইন। মূল ডোমেইন থেকে ডট (.) দ্বারা পৃথক করে সাব ডোমেইন  মূলত তৈরি করা হয় ।


কম্পিউটার আইপি অ্যাড্রেস এর সাহায্যে প্রতিটি জিনিস বোঝে। কিন্তু আমরা মানুষেরা তা বুঝতে পারি না। ফলে প্রয়োজন হয় মনে রাখার মতো একটি ডোমেইন নেইমের। বিস্তারিত আলোচনা পেতে সাথেই থাকুন। 


ইন্টারনেট থেকে কোনো ব্লগ বা ওয়েবসাইট ভিজিট করলে তখন সর্বপ্রথম দেখা হয় ডোমেইনের সাথে। সুতরাং ডোমেইনের মাধ্যমে আমরা ইন্টারনেটে বিভিন্ন ধরনের ওয়েবসাইট খুঁজে পায়।


ডোমেইন নেইম কিভাবে নির্বাচন করতে হয়?

ব্লগিং এর কথা বলতে গেলে প্রথমে ডোমেইনের নেইম নিয়ে চিন্তা করতে হয়। ডোমেইন নেইম হচ্ছে ব্লগের ব্রান্ড বা পরিচিতি। আমরা চাইলে ব্লগের ডোমেইন নেইম পরিবর্তন করতে পারব। কিন্তু এক্ষেত্রে ব্লগসাইটে ভিজিটর ড্রপের প্রচুর সম্ভাবনা থেকে যায়।আজ ব্লগিং এর মূল বিষয় ডোমেইন নেইম নির্বাচন করার কিছু সহজ উপায় আলোচনা করব। অন্যান্য ব্যবসার মতো ব্লগিংএর ক্ষেত্রে  ব্রান্ড অনেক গুরুত্ব বহন করে।


এখন কিভাবে সঠিক ডোমেইন নাম নির্ধারণ করা যায় তানিয়ে একটু ধারণা অর্জন করি।আমরা  সাধারণ নাম দেব না কিওয়ার্ড ভিত্তিক নাম কোনটা ভালো হবে? সেই প্রশ্নের সহজ জবাব দেয়া সম্ভব নয়।যেমন সাধারন নাম হচ্ছে bnLite.com এই রকম।কিন্তু এই ক্ষেত্রে এইটি কোনো নিসের সাথে সম্পর্কযুক্ত নয়। এই নাম দিয়ে সাধারণত ইন্টারনেটে যেকোনো ওয়েবসাইট চালানো সম্ভব হবে। এটা সাধারণ নাম হিসাবে পরিচিত।  


অন্যদিকে কিওয়ার্ড ভিত্তিক নাম হচ্ছে  problogger.com এই ধরণের নাম।নামের ধরণ যাই হউক তবে নাম নির্ধারণের ক্ষেত্রে১২ অক্ষরের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখার চেষ্টা করতে হবে।সাথে সাথে উদ্যোগটির কার্যক্রমের সাথে সম্পৃক্ততা বজায় রাখার চেষ্টা করতে হবে।


ডোমেইন কিভাবে কিনতে হয়? 

একটি সাইট ওপেনিং করতে  সবার আগে যে বিষয়টি মাথায় আসে সেটি হচ্ছে  তার ডোমেইন।  আপনি জানেন কি একটি ডোমেইন কিভাবে কিনতে হয়?


ডোমেইন কিন্তু আমরা দুই ভাবে কিনতে পারি। আর তা হলোঃ-

১। শুধুমাত্র ডোমেইন কেনা

২।কোন হোস্টিং প্যাকের সাথে ডোমেইন কেনা


আগে আমাদের  ডোমেইনটি পছন্দ করতে হবে।যেহেতু ডোমেইন হলো একটি ইউনিক নেইম, তাই আমরা শুধুমাত্র ওই ডোমেইনটিই কিনতে পারব যা আমার আগে অন্য কেউ রেজিস্ট্রেশন করেনি।তাই আমার সর্ব প্রথম কাজ হচ্ছে  আমার সাইটের জন্য একটি সুন্দর নাম পছন্দ করছি। Namecheap হচ্ছে ওয়ার্ল্ড ক্লাস ডোমেইন রেজিস্ট্রার।


ডোমেইন নেইম কতটা গুরুত্বপুর্ণ?

যারা নানাধরণের সাইট নিয়ে কাজ করেন তাদের সকলের অবশ্যই  আইপি সম্পর্কে কিছুনা কিছু ধারণা থাকে। একটি ওয়েবসাইটের জন্য আইপি আ্যাড্রেসটি অতীব জরুরী। আমরা কখনো ভেবে দেখিনা যে এই আইপি ঠিকানাসহ সম্পুর্ন ওয়েবসাইটের নাম মুখস্থ করা বা মনে রাখাটা কতটা কষ্টসাধ্য।আমরা যদি এর পরিবর্তে ডোমেইন নেইম ব্যবহার করি তবে ব্যাপারটা খুবই সহজ হয়। সাথে সাথে মনে রাখতে কোনো সমস্যা হবেনা। সুতরাং একটি ওয়েবসাইটকে সফল করার ক্ষেত্রে ডোমেইন নেইমের গুরুত্বকে কখনোই অস্বীকার করা যাবে না। 


ডোমেইন কিনতে খরচ

বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ডোমেইন নিয়ে নতুন উদ্যোক্তাদের প্রায়ই টেনশন করতে দেখা যায়।আজ আমি আপনাদের সাথে ডোমেইনের দাম নিয়ে কিছু কথা বলতে চাই।  যারা ব্যবসাটি নতুন শুরু করতে চাচ্ছেন সাথে সাথে অনেক অল্প টাকায় ডোমেইন কিনতে চাচ্ছেন, তাদের জন্য .xyz ডোমেইন কিনায় উত্তম হবে। তবে .com ডোমেইন কেনা সব দিক দিয়েই ভালো।


নেইমচিপে সহজভাবে ৮.৮৮ ডলারে .com ডোমেইন পাওয়া যায়। আরেকটা কম দামি ডোমেইন হল .info। এসব কমদামি হলেও মার্কেটে এদের মোটামুটি গ্রহণযোগ্যতা আছে। অনেককেই দেখাযায় .xyz ডোমেইন দিয়ে শুরু করতে বেশ সাচ্ছন্দবোধ করে।


তবে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা বেশিরভাগই .com ডোমেইনে বেশি আগ্রহী বলে আমার মনে হয়।


ডোমেইন কিনতে গেলে .com ডোমেইনের দাম সাধারণত ১০০০-১৫০০ টাকা পড়বে বাংলাদেশী কোম্পানিগুলোতে। আবারএর চেয়ে কমে কিনতে চাইলে সাধারণভাবে  কিছু শর্ত সাপেক্ষে কিনতে হয়।


ডোমেইন রেজিস্ট্রেশন করতে কি কি প্রয়োজন?

আমরা অনলাইনে যদি নিজের  একটি ওয়েবসাইট প্রতিষ্ঠিত করতে চাই তাহলে অবশ্যই আমাকে একটি ডোমেইন নেম রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। আমরা সবাই কম বেশি পাঠাও এর নাম শুনেছি। উনারা মূলত রাইড শেয়ারিং ও কুরিয়ার সার্ভিস দিয়ে থাকে। তারা যদি আগের ট্র্যডিশনাল ওয়েতে  ঐ সকল সার্ভিস প্রদান করতো তাহলে এতো বড় মাল্টি মিলিয়ন কোম্পানি কখনই হতে পারতো না। 


তারা কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করার সাথে সাথে অনলাইনে তাদের ডোমেইন নেইম রেজিস্ট্রেশন করেছে এবং আরও দ্রুত সার্ভিস নিশ্চিত করতে ওয়েবসাইটের পাশাপাশি মোবাইল অ্যাপস তৈরি করেছে। 


এখন আমরা যদি চাই একটি স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠা করতে অথবা ইতিমধ্যে করে ফেলেছি। সেই সাথে আমিও চাচ্ছি আমার প্রদত্ত সার্ভিসটিও ওয়েবসাইট এর মাধ্যেমে প্রদান করব। এখানে আমি যদি শুধু ওয়েবসাইটটি বানিয়ে রাখি তাহলে কাস্টমাররা আমার ওয়েবসাইট কখনই খুজে পাবে না। ঠিক এ কারণেই আমাকে একটি ডোমেইন নেইম রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। এবং সেই ওয়েবসাইট টি সবসময় চালু রাখার জন্য একটি হোস্টিং প্যাকেজ কিনতে হবে।


ইতি কথা

আজকাল অনলাইনে আয় করা এবং অনলাইনে ব্যবসা করাটা সহজ হয়ে উঠেছে। তারমধ্যে জনপ্রিয় মাধ্যম হলো ওয়েবসাইট। সুতরাং উপরের আলোচিত কন্টেন্টে বিশদ আলোচনা করা হলো। যা একটি ওয়েবসাইটের প্রাণ। 


এই আর্টিকেলে যদি আপনাদের কোন রকম প্রশ্ন থাকে তবে কমেন্টবক্সে জানান। আমি বিস্তারিতভাবে জানানোর চেষ্টা করবো।

Previous Post Next Post

{ads}