আয়ের তুলনা: ফ্রিল্যান্সিং VS অনলাইন বিজনেস
যারা আগের পর্ব পড়েননি তারা এখানে ক্লিক করে পড়ে নিতে পারেন।
গত পর্বে ফ্রিল্যান্সিং VS অনলাইন বিজনেস নিয়ে কিছু জেনারেল আইডিয়া দেওয়ার চেষ্টা করেছি। আর এই পর্বে একেবারে প্র্যাকটিক্যালি তুলনাসহ বুঝিয়ে দেবো ঠিক কোন সেক্টরটি আপনার জন্য পার্ফেক্ট এবং কেনো পার্ফেক্ট।
ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরে ইনকাম
শুরুতে বলে রাখি ফ্রিল্যান্সিং এবং অনলাইন বিজনেসের ইনকামে কিছু অনেক পার্থক্য আছে। ফ্রিল্যান্সিংয়ে আয় শুরু হয় তুলনামূলকভাবে খুব দ্রুত! কারণ ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরে কাজের সুযোগ পেলে প্রথম মাস থেকেই উপার্জন সম্ভব। গড়ে একজন নতুন ফ্রিল্যান্সার মাসে ২০-৩০ হাজার টাকা আয় করতে পারে। আর প্রো হলে তো এই ইনকাম ১ লাখ টাকারও বেশি হতে পারে!
তবে হ্যাঁ! একজন ফ্রিল্যান্সারের এই ইনকাম সম্পূর্ণভাবে ক্লায়েন্ট এবং কাজের উপর নির্ভরশীল! কাজ না করলে ইনকামও বন্ধ হয়ে যায়।
অনলাইন বিজনেসে ইনকাম
অন্যদিকে, অনলাইন বিজনেসের ক্ষেত্রে ইনকাম শুরু হতে একটু সময় লাগে! কারণ প্রথমে ব্যবসা সেটআপ করতে হয়, রিসার্চ করতে হয়, মার্কেট বুঝতে হয়, সবকিছু শিখতে হয়। তবে এই বিজনেস সফল হলে কিন্তু ইনকাম অনেক বড় পরিসরে পৌঁছাতে কোনো বাঁধা থাকবে না!
মোটকথা অনলাইন ব্যবসার সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো স্কেলিং। বিজনেসকো বড় করে প্রোডাক্ট সেলের সংখ্যা বাড়ালে আয়ের কোনো সীমা থাকে না। শুধু কি তাই! এছাড়াও অনলাইন ব্যবসায় প্যাসিভ ইনকামের অনেক সুযোগ রয়েছে! যেখানে আপনার সিস্টেম বা প্রোডাক্ট চালু রাখতে পারলে এবং বিজনেস দাঁড় করিয়ে ফেলতে পারলে ঘুমিয়েও ইনকাম করতে পারবেন।
যদিও বিজনেসে ঝুঁকির মাত্রা তুলনামূলক অনেক বেশি! কারণ প্রোডাক্টের চাহিদা ও ইনভেস্টম্যান্টের উপর ইনকাম নির্ভর করে!
টাইম ম্যানেজম্যান্ট অনুযায়ী কোনটি আপনার জন্যে উপযুক্ত?
ফ্রিল্যান্সিংয়ের বড় সুবিধা হলো আপনার টাইম ম্যানেজম্যান্ট বোম আপনার কাছে। আপনি যখন খুশি কাজ করতে পারবেন। সকালে, রাতে বা অবসর সময়ে বসে কাজ করলে এখানে কেউ আপনাকে কিচ্ছুটি বলবে না। তবে হ্যাঁ! আপনাকে ক্লায়েন্টের দেওয়া সময়সীমা বা ডেডলাইনের মধ্যে কাজ জমা দিতে হবে। মানে হলো, টাইম বোম আপনার হাতে থাকলেও কাজের মান বজায় রেখেই দ্রুত কাজ শেষ করতে হবে।
অন্যদিকে অনলাইন বিজনেসের ক্ষেত্রে শুরুটা বেশ সময়সাপেক্ষ। ব্যবসা সেটআপ করতে আপনাকে প্রচুর সময় দিতে হবে। ফোকাস করতে হবে প্রোডাক্ট রিসার্চ, স্টক, মার্কেটিং, ওয়েবসাইট তৈরি ইত্যাদিতে! তবে একবার সবকিছু গুছিয়ে ফেলতে পারলেই বিজনেস অটো গ্রো হতে খুব একটা সময় নেবে না। রিসার্চ অনুসারে ২/৩ বছরে এই সেক্টরে সফলতা পেতে হলে আপনাকে প্রথমদিকে দিনে ৮-১০ ঘণ্টা সময় দিতে হতে পারে। কিন্তু বস একবার ব্যবসা জমে গেলেই দেখবেন দিনে ২-৩ ঘণ্টা মনিটরিং করলেই চলে যাচ্ছে!
ফ্রিল্যান্সিং VS অনলাইন বিজনেস আপনার জন্য কোনটা উপযুক্ত?
ফ্রিল্যান্সিং উপযুক্ত যদি:
- আপনি সময়ের উপর নিয়ন্ত্রণ রাখতে চান
- দ্রুত আয় শুরু করতে চান
- কম ইনভেস্টম্যান্টে কাজ করতে চান
- আপনি দীর্ঘমেয়াদী আয়ে বিশ্বাসী হোন
- অটোমেশন সিস্টেম তৈরি করতে চান
- শুরুতে সময় দিতে প্রস্তুত থাকেন
- প্রচুর ইনভেস্ট করার সামর্থ্য থাকে
মোটকথা: যারা ফ্লেক্সিবল টাইম চান, তাদের জন্য ফ্রিল্যান্সিং। আর যারা ভবিষ্যতে প্যাসিভ ইনকাম চান, তাদের জন্য অনলাইন বিজনেস।
ইতি কথা
চলছে ফ্রিল্যান্সিং VS অনলাইন বিজনেস নিয়ে থাকা বিভিন্ন কনফিউশনের কুরবানির প্রজেক্ট! ইতিমধ্যেই বিভিন্ন কনসেপ্ট হিসাবে ফ্রিল্যান্সিং VS অনলাইন বিজনেস এর ক্ষেত্রে কোনটি আপনার জন্য উপযুক্ত তা নিয়ে আলোচনার চেষ্টা করেছি। যারা এখনো কনফিউশনে আছেন তাদের আপনাদের পরবর্তী আলোচনায় সাথে থাকার অনুরোধ রইলো। যেখানে থাকছে ফিউচারে ফ্রিল্যান্সিং VS অনলাইন বিজনেস এর ক্ষেত্রে কোনটি ভালো হবে, কোনটা টেকসই হবে এবং এই সম্ভাবনাই বা কেনো সে ব্যাপারে বিস্তর আলোচনা। সাথেই থাকুন।
পরবর্তী পর্বটি পড়ে আসুন শুধুমাত্র এক ক্লিকে!
লেখা: সুলতানা আফিয়া তাসনিম